প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন হলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না - পরিবেশ উপদেষ্টা

প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন হলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না - পরিবেশ উপদেষ্টা

 

পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, প্রকৃতিকে ধ্বংস করে উন্নয়ন হলে সে উন্নয়ন টেকসই হবে না। তিনি বলেন, আমরা যদি প্রকৃতিকে ধ্বংস করে, বন কেটে, পাহাড় কেটে রেললাইন নির্মাণকে উন্নয়ন ভাবি, তাহলে আমরা ভুল পথে চলছি। এ ভুল পথ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

 

গতকাল  ঢাকায় শেরে বাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)'র সম্মেলন কক্ষে ‘Introduction to Financial Analysis and Investment Instruments for Climate Finance’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। 

 

উপদেষ্টা বলেন, উন্নয়ন বরাদ্দ সহযোগিতা যতই আসুক, তা যথেষ্ট হবে না যদি আমরা প্রকৃতিকে সংরক্ষণ না করি, যদি আমরা অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না করি। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ চুক্তি (UNFCCC) এবং প্যারিস চুক্তির অধীনে যেসব দেশগুলো আমাদের অর্থ দেওয়ার কথা, তারা এখন প্রকৃতিনির্ভর সমাধানের কথা বলছে অথচ প্রকৃত অর্থ বরাদ্দ করছে না। তারা বলছে, তোমরা নিজেদের প্রস্তুত করো, প্রকৃতি রক্ষা করো, যাতে দুর্যোগে টিকে থাকতে পারো। কিন্তু তারা নিজেদের দায় কমিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এটি কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রকৃতি ও বন রক্ষার ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, একটা সুবিধার বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। যেখানে সিডা, এডিবি এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীরা সহায়তা করছে। আমরা ইতোমধ্যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে বসতে যাচ্ছি বলে তিনি জানান।

 

উপদেষ্টা আরো বলেন, আজকের বাস্তবতায়, অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন না পেলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। অথচ অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বরাদ্দের যে গ্লোবাল সমতা, তার কাছেও আমরা পৌঁছাতে পারিনি। বেশিরভাগ অর্থই যাচ্ছে প্রশমনে, যা উন্নত দেশগুলোর দায়িত্ব। ফলে আমরা একদিকে এমন সমস্যার ভুক্তভোগী, যা আমরা তৈরি করিনি, অন্যদিকে সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের ঋণ নিতে হচ্ছে। তাই জলবায়ু অর্থায়নের রাজনীতি এবং ন্যায়বিচারের রাজনীতি গভীরভাবে বোঝা দরকার। আমাদের পরিকল্পনা আরও স্মার্ট, স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সংগত হতে হবে। এখানে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অনেক কিছু হয়েছে, আরো অনেক কিছু হওয়া দরকার।

 

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোঃ শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য রাখেন। ইআরডি'র অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ওপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন। এসময় এডিবি, সিডা, জিআইজেড-সহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার এদেশীয় প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

 

 

সূত্রঃপিআইডি